রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ অপরাহ্ন
নলছিটি প্রতিনিধি :
নলছিটি-বাকেরগঞ্জ ও বরিশাল সংযুক্ত করার দাবিতে জোলাখালি নামক স্থানে খয়রাবাদ নদীতে সেতু নির্মাণের দাবিতে বরিশাল -পটুয়াখালী মহাসড়কের রাজাখালী (জোলাখালি) খেয়াঘাট এলাকায় বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে মানববন্ধন করে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেছে এলাকাবাসী।
নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের জোলাখালি ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদি ইউনিয়ন এর পশ্চিম চরাদি এবং খাসের হাট বাজার এলাকার সংযোগ স্থাপনের জন্য জোলাখালি এলাকায় খায়রাবাত নদীতে একটি সেতু নির্মানের দাবি দীর্ঘ দিনের।নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন এর সীমান্তবর্তী একটি এলাকা বাকেরগঞ্জের চরাদি এবং খাসের হাট, খায়রাবাদ নদী যেটিকে এই উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। সেখানে অন্তত দুই উপজেলার নদীর দুই তীরের ২০-২৫ হাজার লোকের বসবাস। জনসাধারণের চিকিৎসার জন্য তাদের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা বৈঠা বাওয়া একটি মাত্র নৌকা। তাও জোলাখালি খেয়াঘাটে সন্ধ্যা ৭ টার পর বন্ধ,আর খাসের হাট খেয়া ১০ টার পর বন্ধ হয়ে যায়।
নদী বেষ্ঠিত এবং বরিশাল পটুয়াখালী মহা সড়ক এর সাথে সংযুক্ত না হওয়ার কারনে মালামাল বা রোগী পরিবহনে তেমন গাড়িও চলাচলের ব্যবস্থা নেই।বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে নিতে হলেও তাদের একমাত্র পথ রানিরহাট ব্রিজ হয়ে যাওয়া, ফলে ততক্ষনে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে যায়।একটি সেতুর অভাবে তাদেরকে প্রায় পনের কিলোমিটার বাড়তি পথ ঘুরতে হয়।যারফলে মুমূর্ষু অবস্থায় রোগীদের বাচাঁনোও সম্ভব হয় না।
এছাড়াও এই বিচ্ছিন্ন এলাকাটিতে ব্যবসা বানিজ্যে অন্যতম সমস্যা পন্য পরিবহনে, যদি ছোট্ট এই সেতুটি নির্মাণ করা হয় তাহলে পন্য পরিবহনে ভোগান্তি লাঘব হলে ব্যাবসা বানিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ হবে।
এছাড়াও চরাদি থেকে প্রায় সকল ছাত্র ছাত্রীদের দপদপিয়া স্কুল এবং কলেজে পড়ালেখা করতে খেয়া পার হয়ে আসতে হয়।যাদের সব সময়ই অনেক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়,বিশেষ করে বর্ষাকালে সেই ঝুঁকি বেড়ে যায় কয়েক গুন।অনেক সময়ই স্কুর,কলেজ পড়ুয়া ছাত্র- ছাত্রী,পথচারী শিশু,কিশোর- কিশোরী ও বয় বৃদ্ধরা পা পিছলে পরে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে, বই খাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মানববন্ধনে সমাজকর্মী বালী তূর্য বলেন, চরাদী এলাকাটি বাকেরগঞ্জের অধীনে হলেও তাদের ওঠাবসা,পড়াশোনা সব নলছিটির দপদপিয়ার সাথে।কিন্তু ছোট একটি সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন এই জনপদের মানুষ সিমাহীন দূর্ভোগের স্বীকার হচ্ছেন।এদের বাচ্চাদের পড়ালেখায় ঝুঁকি, চিকিৎসা করাতে ঝুঁকি, যাতায়াতে ঝুঁকি, এত ঝুঁকি নিয়ে তারা কিভাবে মূল ধারায় সংযুক্ত হবে।
সুজন – সুশাসনের জন্য নাগরিক নলছিটি উপজেলা কমিটির সভাপতি মো: খলিলুর রহমান মৃধা বলেন, যদি এখানে সেতুটি নির্মান করা হয় তাহলে এটি বরিশাল বিভাগের এবং মূল মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত হয়ে গেলেই অত্র এলাকায় শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠে কৃষি ও শিল্পের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। এতে স্থানীয়দের জীবনযাত্রার মান ব্যাপক উন্নয়ন হবে।এলাকাবাসী যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে যাতে দ্রুতই এই সমস্যাটির সমাধান করা হয়।
এছাড়াও চরাদি এলাকার সমাজসেবক মো:ফিরোজ আলম বলেন,এলাকাটি এক প্রকার বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো হওয়ায় আমরা বিভাগীয় শহর ও বরিশার বিশ্ববিদ্যালয় মহাসড়কের পাশে থেকেও সুবিধাবঞ্চিত হচ্ছিআমরা।এখানে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি করছি।মানববন্ধনে
আরও বক্তব্য রাখেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদী এলাকার জুয়েল সিকদার,কামাল সিকদার,তোফায়েল ফকির,জাকির সিকদার,রুবেল মৃধা,হুমায়ুন সিকদার,কবির হোসেন মাঝী প্রমুখ।মানববন্ধন শেষে বরিশাল জেলা প্রশাসক ও বরিশাল -৬ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য বরাবর স্মারক লিপিও প্রদান করা হয়।ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে প্রায় শতশত লোক উপস্থিত ছিলেন।